
পাসপোর্ট এবং ভিসা জটিলতায় দেশে ফিরতে পারছিনা। তবে আমার জন্য জনসাধারণের উন্নয়ন কাজ আটকে রয়নি। আমি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে যুক্ত হয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রেখেছি। ভিসা এবং পাসপোর্ট নবায়ন করতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে, কাগজপত্রের জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত দেশে এসে কর্মস্থলে যোগ দিব। আমেরিকা থেকে এমনটিই বলছিলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন সালেহা ইসলাম।
পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গেল বছরের ২২ মার্চ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস ছুটির আবেদন করেন সালেহা। এরপর তিনি আমেরিকায় চলে যান। কিন্তু তার ছুটি মঞ্জুরের কোনো চিঠি পায়নি স্থানীয় প্রশাসন। ৬ মাস ছুটির পরেও কেন দেশে আসলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহা ইসলাম বলেন, শারীরিক অসুস্থতা এবং কোভিড পেন্ডামিকের কারণে আমার দেশে ফিরতে দেরি হচ্ছে। এরই মধ্যে আমার পাসপোর্ট এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
আমার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় আমি এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যেতে পারছি না। এই বিষয়গুলো আমি উপজেলা চেয়ারম্যনকে অবগত করেছি তিনি আমার পক্ষে ছুটির সময়সীমা আরো ৬ মাস বাড়িয়ে স্থানীয় সরকার সচিব বরাবর আবেদন করেছেন। চলতি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত এই ছুটির আবেদন করা হয় বলে জানান তিনি।
ছুটির পুন:আবেদন গৃহীত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সালেহা ইসলাম বলেন, আমি দেশে নাই কি করে জানাব। কেউ হয়ত ষড়যন্ত্র করে আমার দেওয়া কাগজ পাঠায়নি। আমি দেশে এসে সব খোঁজ নিব।
এবার দেশে এসে নিজ এলাকার প্রত্যন্ত জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি দেশে ফিরে বাড়ী, গাড়ী এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাড় করাব। আমি তখন নিয়মিত গাড়ী নিয়ে সারা এলাকা ঘুরে বেড়াব। অলরেডি প্ল্যান হয়ে গেছে। আমেরিকা থাকার ইচ্ছা আমার নাই।
রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে একটি মহল আমার পিছু লেগেছে জানিয়ে সালেহা ইসলাম বলেন, একজন ভাইস চেয়ারম্যানের যে কাজ আমি তা দূরে থেকেও সঠিকভাবে পালন করি। আমি সার্বক্ষণ মিটিংয়ের খোঁজ-খবর রখি। আমি ১০টি মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করি নাই এটাই আমার অপরাধ। তবে আমি সবার সাথে যোগাযোগ রাখি।
ইউএসএ’র নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় তোরজোর শুরু করেছেন সালেহা। এ জন্য জনগণকে দেওয়া প্রতিশূতি ভঙ্গ হলেও তিনি দেশে ফিরছেন না। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর নিজ দলীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী।
তাঁরা বলেন, প্রতিদিন আমেরিকায় বিভিন্ন সভা-সেমিনার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছেন। যাকিনা একজন দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি করতে পারেন না। পাঁচ বছরের জন্য তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েছে তার ভিতর দেড় বছর ধরেই প্রবাসে আছেন তিনি। কবে দেশে আসবেন তাও নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। তাঁর এই দায়িত্বহীন কর্মকান্ডের জন্য দলীয় সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হোসেন বলেন, তিনি ৬ মাসের ছুটি নিয়ে প্রবাসে যান। পরবর্তীতি ছুটি শেষে আসতে না পারায় আমাকে জানালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পুণঃ ছুটির আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা ইসলামের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে ফিরতি নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।